লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চাপ ও তেল ট্যাংকার অবরোধের ঘোষণার মধ্যেই সম্ভাব্য সহিংসতা ও রক্তপাত ঠেকাতে জাতিসংঘের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছে মেক্সিকো।
উত্তর আমেরিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও সংলাপের ওপরও জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি ভেনেজুয়েলায় ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতে জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির ওপর চাপ আরও বাড়াচ্ছেন, তখনই তিনি এই আহ্বান জানালেন।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে শেইনবাউম বলেন, ‘জাতিসংঘের ভূমিকা চোখে পড়ার মতোভাবে অনুপস্থিত। যেকোনও রক্তপাত ঠেকাতে এবং সব সময় শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে।’
ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী ‘নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারের’ ওপর অবরোধ ঘোষণার পর তিনি এই মন্তব্য করেন। গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতি গড়ে তুলছে। তাদের দাবি, লাতিন আমেরিকায় মাদক পাচার দমন করাই এই অভিযানের লক্ষ্য। তবে ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস এই সামরিক তৎপরতাকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা এবং ভেনেজুয়েলার তেল ‘চুরির’ অভিযান হিসেবে দেখছে।
প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম বলেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নেতৃত্ব নিয়ে যে-ই মতামত থাকুক না কেন, মেক্সিকোর অবস্থান স্পষ্ট— আমরা যেকোনও ধরনের ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ প্রত্যাখ্যান করি। তিনি বলেন, ‘যেকোনও আন্তর্জাতিক বিরোধে আমরা সংলাপ ও শান্তির পক্ষে, হস্তক্ষেপের নয়। এটি আমাদের নীতিগত অবস্থান এবং আমাদের সংবিধানের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
এদিকে বুধবার কুইটোতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানায়, ইকুয়েডরের প্রশান্ত মহাসাগরীয় বন্দরনগরী মান্তায় ‘ইকুয়েডরীয় বিমানবাহিনীর সঙ্গে সাময়িক অভিযানে’ যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন। তবে কতজন সদস্য বা কী ধরনের সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
এর আগে গত সোমবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ করা তিনটি নৌযানে হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এই বিতর্কিত অভিযানে ইতোমধ্যেই বহু মানুষের প্রাণ গেছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারের অভিযোগে নৌযান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে। এসব অভিযানে অন্তত ২৬টি ছোট নৌযান ধ্বংস করা হয়েছে এবং কমপক্ষে ৯৫ জন নিহত হয়েছেন।
এবি