জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ধানমন্ডি থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী জান্নাত আরা রুমীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জান্নাত আরা রুমিকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হত্যা ও ধর্ষণের হুমকির পর রহস্যজনক ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফ্যাসিবাদবিরোধী এই যোদ্ধার রহস্যজন্যক মৃত্যুতে এনসিপি গভীর শোক এবং উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মৃত্যুর আগে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পরিচালিত সংঘবদ্ধ সাইবার বুলিং, প্রকাশ্য প্রাণনাশের হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার ছিলেন। এই হুমকিদাতা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নাম, মোবাইল নম্বর ও প্রমাণাদি এক মাস আগে বিগত ১৩ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হলেও রহস্যজনকভাবে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
‘এ অবস্থায় এনসিপি মনে করে, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লাগাতার হুমকি ও সহিংস মানসিক চাপই জান্নাত আরা রুমীর মৃত্যুর পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। একজন সাহসী নারী রাজনৈতিক কর্মীকে পরিকল্পিতভাবে আতঙ্কিত, একঘরে ও বিপর্যস্ত করে তোলার এই পদ্ধতি আওয়ামী সন্ত্রাসী রাজনীতিরই ধারাবাহিক বহিঃপ্রকাশ।’
‘জাতীয় নাগরিক পার্টি এই মৃত্যুর জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়ের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে এবং অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত, দায়ী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘জান্নাত আরা রুমীর মৃত্যু শুধু একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিরোধী রাজনীতির ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসের আরেকটি নির্মম অধ্যায়।’
‘আল্লাহ তায়ালা মরহুমাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও সহযোদ্ধাদের এই শোক সইবার শক্তি দান করুন, আমিন।’
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে জিগাতলা পুরাতন কাঁচাবাজার রোড এলাকায় অবস্থিত জান্নাতী ছাত্রী হোস্টেলের পঞ্চম তলা থেকে জান্নাত আরা রুমীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জান্নাত আরা রুমী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ (ধানমন্ডি থানা) সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ছিলেন।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, ঝিগাতলা পুরান কাঁচা বাজার এর পাশে একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের দিন দুপুরে ধানমন্ডিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে এক নারীকে মারধরের ঘটনায় রুমীর নাম আলোচনায় আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির সামনে ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেওয়ায় ওই নারীকে মারধর করা হয়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর থেকেই জান্নাত আরা রুমী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি ও ধমকির শিকার হচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
এবি