বিজয় দিবসে শরীয়তপুরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে। সকালে কবরের পাশে আগুন দেওয়ার আলামত দেখতে পেয়ে বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামে।
আগুন দেওয়া কবরটি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মান্নান খানের। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের এই গর্বিত সন্তান ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। পরে পরিবারের বসতঘরের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী মাহফুজা বেগম ও চার সন্তান দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে নিয়ামতপুর গ্রামেই বসবাস করছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহফুজা বেগম কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কবরের পাশে পোড়া ছাই ও আগুনের চিহ্ন দেখতে পান। বিষয়টি দেখে তিনি চিৎকার করলে পরিবারের অন্য সদস্যরা ছুটে আসেন। কবরের ওপর ছাই পড়ে থাকা ও হালকা ধোঁয়া বের হতে দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক আবদুল আজিজ সিকদার জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মান্নান খানের মেয়ে আফরোজা আক্তার জানান, কারা কী উদ্দেশ্যে এমন কাজ করেছে, তা বুঝতে পারছি না। আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শঙ্কিত।পরে ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবহিত করেছি।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, আমরা গর্বিত একটি পরিবার। আমার স্বামী এদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছেন। আমার স্বামীর কবরের সঙ্গে এমন অবমাননা সহ্য করতে পারছি না। বিজয় দিবসের আনন্দের মাঝেই এই ঘটনা আমাদের কাঁদিয়ে দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিন বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর আগুন দেওয়ার বিষয়টি তাঁর মেয়ের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে লোক পাঠিয়ে ঘটনার বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হবে।
এসআর