আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আগমনের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চান দলটির নেতাকর্মীরা। তারেক রহমানের সঙ্গে তার মেয়ে জাইমা রহমানও দেশে আসতে পারেন বলে জানা গেছে।
দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে তারেক রহমান সরাসরি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মায়ের কাছে যাবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালেই নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
এসময় রুমন বলেন, ‘মানুষের জীবনে মা সবার আগে।
তিনি (তারেক রহমান) সম্ভবত বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তার মায়ের কাছে আসবেন। এরপর তিনি সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বসবেন, পরামর্শ করবেন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবেন।’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আগমন উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর রাজধানীতে বড় সমাগম করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে তারেক রহমানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান দলের নেতারা। একই সঙ্গে তারেক রহমানকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়াটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলেও মনে করেন তারা।
আতিকুর রহমান রুমন গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমানের নিরাপত্তা। কোনো বড় ভবনের নিচে বড় করে লিখে রাখা হয় ‘সেফটি ফার্স্ট’, ঠিক তেমনভাবেই আমাদের প্রিয় নেতার ক্ষেত্রেও এই কথাটাই সবার আগে ভাবতে হবে। এটা শুধু দলীয় আবেগের বিষয় নয়, এটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রশ্ন।”
তারেক রহমানের নিরাপত্তা ‘রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব’ কেন, এর ব্যাখ্যা দিয়ে রুমন বলেন, ‘কারণ তারেক রহমান শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের নেতা নন।
তিনি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সন্তান, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উত্তরসূরি এবং আগামী দিনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা রক্ষার অন্যতম প্রধান ভরসা। এই কারণেই বলছি, দল কতটুকু করল না করল—সেটার চেয়ে রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব অনেক বড় ।
আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে রাজধানীতে জড়ো হবেন দলের নেতাকর্মীরা। ধারণা করা হচ্ছে, রেকর্ডসংখ্যক নেতাকর্মী ও জনমানুষের ভিড় হতে পারে রাজধানীতে। এত বড় জমায়েত সামাল দিতে বিএনপি প্রস্তুত বলেও দাবি করা হয়েছে।
দলের মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন বলেন, ‘বাংলাদেশের সংস্কৃতি আলাদা, মানুষের আবেগ আলাদা। দীর্ঘদিন পর এত বড় একজন নেতা দেশে ফিরছেন—স্বাভাবিকভাবেই মানুষের আবেগ উথলে পড়বে। আমি বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ এমন এক অভ্যর্থনা হবে, যেটি ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে আবারও বলছি—এই আবেগ যেন নিরাপত্তাকে ছাপিয়ে না যায়।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ওই দিন সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন তারেক রহমান। আজ বিকেল ৪টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন তিনি। সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আজ আমরা সরেজমিন বিমানবন্দরে যেখানে তারেক রহমান অবতরণ করবেন, সে জায়গা, কোথা থেকে গাড়িতে উঠবেন এবং সব রাস্তা পরিদর্শন করেছি। যেখান থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন, বাসায় যাবেন।’
তবে রুমন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত রুট বা সময়ক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, ‘এখনো চূড়ান্ত কিছু জানানো হয়নি। সম্ভবত ২-৩ দিন আগে সব কিছু পরিষ্কার হবে—রুট কী হবে, সময় কখন, কিভাবে তিনি চলাচল করবেন—সবই তখন জানা যাবে। এগুলো গোপন রাখা নিরাপত্তার জন্যই জরুরি।’
দেশে ফিরে তারেক রহমান আপাতত মায়ের বাসা ‘ফিরোজা’য় থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন আতিকুর রহমান রুমন। তিনি বলেন, ‘তার (তারেক রহমান) নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। তার মায়ের বাড়িটি সংস্কারাধীন। প্রয়োজনে আপাতত ফিরোজা বাসার কয়েকটি কক্ষ ঠিক করা আছে, সেটাতেই থাকতে পারেন।’
এদিকে বিএনপি নেতাদের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে তিনি ঢাকায় আসবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার মেয়ে জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।
এবি