খাগড়াছড়ির প্রথম হানাদার মুক্ত এলাকা রামগড়। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে (৮ ডিসেম্বর) তৎকালীন মহকুমা শহর রামগড়ে দিনের আলো ফোটার সাথে সাথে বিজয়ের হাসিতে মুখরিত হয়ে উঠে সকল মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষ।
যুদ্ধের শুরুর দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিকামী মানুষ রামগড়ে আসতে শুরু করেন। ১৯৭১ সালের সেই উত্তাল সময়ে গঠন করা সংগ্রাম কমিটি। রামগড় সেক্টরের আওতাধীন চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এই রামগড়।
রামগড় ও তার পার্শবর্তী এলাকা নিজেদের জন্য হুমকি মনে করে প্রতিপক্ষ ২ মে প্রথম বারের মতো রামগড়ে হামলা চালায়। সে সময় মুক্তিযুদ্ধে রামগড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর মো. রফিকুল ইসলামের নির্দেশে সব যুদ্ধসামগ্রী সীমান্তের ওপারে স্থানান্তর করা হয়। সে দিনই হানাদার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে রামগড় শহর ও আশপাশ এলাকা জ্বালিয়ে দেয়। এতে পাক বাহিনীর হাতে রামগড়ের সাময়িক পতন ঘটেছিলো।
মুক্তিযুদ্ধের প্রায় শেষের দিকে ৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর গেরিলা আক্রমণ ও ভারতীয় যুদ্ধবিমান থেকে রামগড়ের শত্রু ঘাঁটিতে বোমা বর্ষণ করা হলে পাক সেনারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে রাতের আঁধারে রামগড় ত্যাগ করেন।
৮ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় দুটি ভারতীয় জঙ্গী বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছে রামগড়কে পুরোপুরি হানাদার মুক্ত করে। পরদিন প্রথম প্রহরে রামগড় প্রধান ডাকঘর প্রাঙ্গণে বিজয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে মুক্ত হয় রামগড়।
৮ ডিসেম্বর (সোমবার) সকালে রামগড় মুক্ত দিবস উপলক্ষে রামগড় উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, রাজনৈতিক সংগঠনগুলো রামগড় লেকপাড়ে স্থাপিত বিজয় ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অপর্ণ, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন, রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী শামীম। এছাড়াও অংশ নেন স্থানীয় স্কুল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক প্রমূখ।
আরডি