গত তিন বছরে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে মোট ২ হাজার ৮০৯ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। এমন তথ্যই সামনে এনেছে রাজ্য সরকার। তবে একই সঙ্গে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটির সরকার দাবি করেছে, সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা কমছে এবং কৃষকদের জন্য নেয়া সরকারি প্রকল্পগুলো ব্যর্থ হয়নি।
কর্ণাটক বিধানসভায় বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ বেল্লাদের এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী এন চেলুভারায়স্বামী লিখিতভাবে এই তথ্য তুলে ধরেন। অবশ্য বিধানসভায় উপস্থাপিত তথ্যে একদিকে ভয়াবহ চিত্র উঠে এলেও অন্যদিকে সরকারি প্রকল্প ও উদ্যোগের কার্যকারিতা নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে সরকার। সরকারের দাবি, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। খবর এনডিটিভি
বিধানসভায় উপস্থাপিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে কর্ণাটকে ১ হাজার ২৫৪ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। পরের বছর ২০২৪–২৫ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১৭৮ জন। আর চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৩৭৭ জন কৃষষের আত্মহত্যার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এভাবে তিন বছরে মোট আত্মহত্যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮০৯ জনে।
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যা কমেছে বলে রাজ্যটির সরকার জানালেও কৃষিমন্ত্রী স্বীকার করেন যে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-এর তথ্য অনুযায়ী কৃষক আত্মহত্যার ক্ষেত্রে কর্ণাটক এখনও দেশজুড়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বছরভিত্তিক ও জেলাভিত্তিক বিস্তারিত তথ্য সংযুক্তি হিসেবে বিধানসভায় জমা দেয়া হয়েছে।
এদিকে কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে সরকার জানায়, অনেক নিহত কৃষকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (ডিবিটি) ব্যবস্থার কারিগরি সমস্যার কারণে অর্থ পরিশোধ আটকে আছে। এসব সমস্যার মধ্যে নিষ্ক্রিয় বা বন্ধ ব্যাংক হিসাব, আধারের সঙ্গে হিসাব সংযুক্ত না থাকা, এনপিসিআই ম্যাপিং ব্যর্থতা এবং জব্দ হয়ে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টও রয়েছে।
মন্ত্রী আশ্বাস দেন, এসব সমস্যা সমাধান হলেই বকেয়া ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করা হবে। তবে তিনি জানান, অর্থ বিভাগের কিছু বিধিনিষেধের কারণে পুরোনো কয়েকটি মামলায় ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, গত ৬ নভেম্বর জারি করা অর্থ বিভাগের এক সাম্প্রতিক নির্দেশনা অনুযায়ী, কৃষক আত্মহত্যার ঘটনায় সর্বোচ্চ ৯ মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ নিষ্পত্তি করতে হবে। আর দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের ক্ষেত্রে ছয় মাসের মধ্যে অর্থ পরিশোধ সম্পন্ন করতে হবে।
সমস্যার গুরুত্ব স্বীকার করলেও রাজ্য সরকার বলেছে, আগের তিন বছরের তুলনায় বর্তমানে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা কমেছে। একই সঙ্গে সরকার দাবি করেছে, সরকারি প্রকল্পগুলো ব্যর্থ হয়নি এবং চলমান উদ্যোগগুলো ইতিবাচক ফল দিচ্ছে।
এবি