যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার মধ্যকার উত্তেজনা এখন চরমে পৌঁছেছে। বিশেষ করে মাদক পাচার নির্মূল করার নামে ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানো এবং ভেনেজুয়েলার বহু নৌযানে হামলা করে ৯০-এরও বেশি মানুষকে হত্যার পর বেশ চাপে রয়েছে ভেনেজুয়েলা। সর্বশেষ দেশটির তেল বাণিজ্য বন্ধে অবরোধ আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এমন পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো আরেকটি লিবিয়া, আফগানিস্তান বা ইরাক তৈরি করা। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক হুমকির কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে বিশ্ব নতুন করে আরেকটি ‘ভিয়েতনাম’ দেখতে পারে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দেশটির রাজধানী কারাকাসে ওয়ার্কার্স ক্লাস কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মাদুরো ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক তৎপরতা এবং সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার মালিকানাধীন ১৯ লাখ ব্যারেল তেলবাহী একটি বেসামরিক ট্যাঙ্কার আটকের তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ওয়াশিংটন ইচ্ছাকৃতভাবে ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়াতে মিথ্যা অজুহাত তৈরি করছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে দেশটিকে লিবিয়া, আফগানিস্তান বা ইরাকের মতো সংকটে ঠেলে দেয়া। আমরা নতুন ভিয়েতনাম চাই না। ভেনেজুয়েলা ২৫ সপ্তাহ ধরে এই বহুমুখী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, প্রতিরোধ করছে এবং পরাজিত করে আসছে।’
যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও উল্লেখ করেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট। বলেন, মানসিক সন্ত্রাসবাদ থেকে শুরু করে জলদস্যুতার মতো অভিযান পরিচালনা করছে ওয়াশিংটন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দাবি করেন, ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে রাখা হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সামরিক বহর দিয়ে। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এই চাপ আরও বাড়বে এবং ভেনেজুয়েলা যতক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের চুরি হওয়া তেল, জমি ও সম্পদ ফেরত না দেবে ততক্ষণ পর্যন্ত মার্কিন অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, তার প্রশাসন মাদুরো সরকারকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে। তিনি দাবি করেন, এই অবরোধের মাধ্যমে মাদুরো সরকারের মাদক ব্যবসা, মানব পাচার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ চুরির অর্থায়ন বন্ধ করা সম্ভব হবে। অবৈধ অভিবাসী ও অপরাধীদের দ্রুত বহিষ্কারেরও ঘোষণা দেন তিনি।
সূত্র: আনাদোলু